সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: ‘সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। যখন সাধ্য হলো কিছু মানুষ পথ চলায় কাটা সৃষ্টি করে দিল। যদিও পথের কাটাকে কোনোদিনই আমি তোয়াক্কা করিনি এবং করবো ও না। পথ যখন সৃষ্টি করেছি,সেই পথে থেকেই কাজ করে যাবো মানুষের। আর যাদের জন্য কাজ করছি অন্তত সেইসব মানুষ সারাক্ষণ থাকবে আমার পথচলার সাথী।’ কথাগুলো বলছিলেন তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন নারী উদ্যোক্তা। সফল এই নারী উদ্যোক্তার নাম স্বপ্না বেগম।
সিলেট নগরীর পূর্ব স্টেডিয়াম মার্কেটস্থ স্বপ্না ফিজিওথেরাপী এন্ড হিজমা সেন্টারের স্বাত্বাধিকারী তিনি। সম্প্রতি একটি কুচক্রী মহল কুৎসা রটায় প্রতিষ্ঠানটির নামে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু সফল হয়নি ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র। উপরন্তু স্বপ্না ফিজিওথেরাপীর ভূয়সী প্রশংসা করেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এই ঘটনার পর সিলেট কোতয়ালী থানায় ১৩ নভেম্বর একটি জিডি করেন স্বপ্না বেগম। জিডি নং ১২৩৩।ছোটোবেলা থেকেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন স্বপ্না বেগম। স্কুলে অধ্যয়ন থেকেই সেই স্বপ্ন মাথায় ঝেঁকে বসে। খুব কম বয়সে বিয়ে হয়ে যায় স্বপ্না বেগমের। তবুও দমে থাকেন নি তিনি। স্বামীর সহযোগী হয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করার পথে পা রাখেন তিনি। কি করা যায়-এমন চিন্তায় মশগুল থাকেন তিনি। একদিন নিকটাত্মীয় হিজমা থেরাপীর প্রয়োজন হলে তিনি ছুটতে থাকেন স্পেডিয়াম মার্কেটে। কিন্তু নিরাশ হন তিনি। কোথাও পাওয়া যায়নি হিজমা থেরাপি সেন্টার। অগত্যা ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে সমস্যার সমাধান করেন তিনি।
এরপর থেকেই থেরাপি সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে স্বপ্না বেগম ভর্তি হলেন একটি ইন্সটিটিউটে। সিলেট এবং ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকেও দুই ও তিন বৎসর মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন সফলভাবে। এরপর নিজ নামে গড়ে তোলেন স্বপ্নের ফিজিওথেরাপী সেন্টার। সিলেটের বড় বড় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছেও একটি বিশ্বাস এবং নির্ভরতার নাম এই প্রতিষ্ঠান। স্বপ্না বেগম কাজ করেন মানুষের কল্যাণে। করোনাকালীন গৃহবন্দী মানুষের পাশে সাধ্যানুযায়ী খাবার পৌছে দেন তিনি। যুকত্ রয়েছেন রোটারী ক্লাবের সাথে। রোটারী ক্লাবের হয়ে কাজ করছেন দেশের কল্যাণে। নিজে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে জড়িত হন সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের সাথে।
স্বপ্না বেগমের প্রতিষ্ঠানে এখন কাজ করছেন প্রায় ৮ জন মানুষ। কথা হয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জুঁই দাস ও ডেইজি রায়ের সাথে। তারা জানায় এই প্রতিষ্ঠান থেকে জব করেই লেখাপড়া চলছে তাদের। একই সাখে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে পরিবারে। তারা বলেন, এমন একটি কাজের সাথে যুক্ত হয়েছি-যেখান থেকে মানুষ পাচ্ছে সেবা এবং আমারা কুঁড়াচ্ছি দো’আ ও ভালোবাসা। স্বপ্না বেগম সম্পর্কে তাদের বক্তব্য-‘ ম্যাডাম আমাদের মায়ের মতো। সবকিছু শিখিয়ে দেন পাশে থেকে।’
বিএ/১৪ নভেম্বর